কঙ্গনা রনৌত। বলিউডে যাত্রা সেই ২০০৬ সাল থেকে, গ্যাংস্টার সিনেমা দিয়ে। ভালো অভিনয়ের তকমা গায়ে লেখালেও ঠোঁটকাটা হিসেবে আলোচনায় এসেছেন প্রতিবার। সোজাসাপ্টা কথা বলায় পটু এই অভিনেত্রীর এ কারণে সামনে পড়েছে অসংখ্য বাধা। তবে ভয় পাননি তিনি। প্রতিটি বাধা উপেক্ষা করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। কুইন ছবি দিয়ে নিজেকে চিনিয়েছেন জাত অভিনেত্রী হিসেবে। এবার মনিকর্নিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি সিনেমা দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। এই সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি করেছেন পরিচালনাও। তবে কঙ্গনার পথটি একেবারেই সহজ ছিল না। উত্থান পতনের এই পথে নিজের উপলদ্ধিটুকু জানালেন গণমাধ্যমে।
মানুষ আমাকে আটকে রাখতে চেয়েছিল। অথচ তাদের আমার জীবনীভিত্তিক সিনেমা বানানো উচিত (হাসি)। এ বছর আমি মনিকর্নিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি, মেন্টাল হ্যায় কিয়া ও পাঙ্গার মতো রোমাঞ্চকর কিছু বিষয় নিয়ে সিনেমা করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জীবন আসলে ঢেউ এর মতো। কখনো উঁচু কখনো নিচু। আমার খুবই জঘন্য সময় যাচ্ছিল। এ বছর তা পাল্টে গেল। ২০১৮ সালটি আমার খারাপ গেছে। আমার সিনেমা খুব একটা কাজ করেনি। আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়। আমি একেবারে তলানিতে পৌঁছে যাই। কিন্তু আপনি জানেন না। জীবন আপনাকে মাঝেমধ্যে অবাক করে দেয়। আশা করি আরও ভালো কিছু সামনে আসছে।
View this post on Instagram
আমার কাছে নিজেকে একাকি মনে হয় না। মানুষ আমার সঙ্গে শারীরিকভাবে নেই কিন্তু বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাকে সহযোগিতা করা হয়। আমি অনেক কিছুর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু কখনোই আমাকে মানুষের সামনে বিব্রত হতে হয়নি। আমি বোকা চেহারায় মানুষের সামনে কখনো দাঁড়াইনি। এটা এমন নয় যে, ইন্ড্রাস্ট্রির ভেতরের কারও সাহায্যই আমার লাগবে। আমাকে ইন্ড্রাস্ট্রির বাইরের অনেক লোক সহযোগিতা করেছে। আল্লাহ জানেন, কোথা থেকে এইসব মানুষ আমাকে সাহায্য করে এবং কীভাবে আমার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়।উদাহরণ দিয়ে বলতে পারি, যখন নেপোটিজম নিয়ে কথাবার্তা উঠল, করণ জোহার আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এমন উদাহরণ প্রচুর আছে। যখন আমি মণিকর্নিকার নিয়ে কাজ শুরু করি, সবকিছু থেকে আমি মুক্ত হয়ে যাই। এগুলো আমি কখনোই গা করিনি। কিন্তু এ বিষয়গুলো নিয়ে কথাবার্তা কখনোই শেষ হয়নি। আমি একজন বড় তারকা নই এবং আমার এই সংঘাত হয়েছিল সহশিল্পীর সঙ্গে। আমি আমাকে সাহায্য করার লোক খুঁজেছিলাম।
যাই হোক একই সময়ে আমি নিজেকে কোনঠাসা ভাবতে শুরু করি। বিশেষ করে সিমরান সিনেমাটি ব্যর্থ হওয়ার পর। পাণ্ডুলিপি লেখক অপূর্ব আসরানি, পরিচালক কেতন মেহতা, করণ জোহর ও রাকেশ রোশন এবং আরও কিছু লোক আমার সমালোচনা করেছে। হতে পারে এটাই একমাত্র ঘটনা যেখানে আমার শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল।এই সময়ে আমার নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হতো। এমনকি ওই বিষয়গুলো চিন্তা করলেও মাথা ভারি হয়ে যায়। কেতন গিয়েছিল ইকনোমিক অফেন্স উইং এ, আদিত্য পাঞ্চোলি আমার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়, রাকেশ রোশন ক্রমাগত বলে যেত, তিনি কিছু একটা প্রকাশ করে দেবেন। যাই হোক কোথাও আর কিছু হয়নি।
View this post on Instagram
ইকনোমিক অফেন্স উইং মামলা ফিরিয়ে নেয়। তারা যে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে তাতে কিছুই হয়নি। এই ঘটনার কারণে করণ ক্ষমা চেয়েছে। এখন আমি ভাবি, আমি সবকিছু একসঙ্গে নিতে পারতাম না। কারণ ছয়–সাতটি ঘটনা একই সময়ে ঘটেছে। এবং আমি ছিলাম একমাত্র লক্ষ্য।
বলিউডের শীর্ষ নায়িকাদের মধ্যে তালিকায় আছেন দীপিকা পাড়ুকোন, তারপরে আলিয়া ভাট ও তারপরে আপনি। শীর্ষস্থান নিয়ে কী ভাবছেন?
এই ব্যাপারটি নিয়ে আমার কোন বিভ্রম নেই। আজকের শাহরুখ খান ও আমির খানের জায়গাটি তাদের পূর্বসুরী দীলিপ কুমার ও অমিতাভ বচ্চনের। কিন্তু তারা সকলেই আলাদাভাবে কাজ করেছেন।মেয়েরাও এভাবে চলবে। এতে এত নজর কাড়া করে দেখার কিছু নেই। মেয়েদের বেলায় পার্থক্যও আছে। যা এখন আমরা করছি এটা অবশ্যই ভালো। কিন্তু আমি জানি না আমি এই শীর্ষে থাকা ও ক্রম তালিকার আদৌ অংশ কিনা। আশি ও নব্বইয়ের দশকে শ্রীদেবী ও মাধুরীর দীক্ষিতেরা ছিলেন। তারা এই তারকাখ্যাতি পেয়েছেন। তাদের ভেতরে আপনি তারকাখ্যতি দেখতে পারেন। এটা খুবই সময়ঘটিত ব্যাপার।আমরা আমাদের নিজেদের উন্নতি করছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আমরা কি আমাদের পুরুষ সহশিল্পীদের অংশ? না। যাই হোক, আমরা দর্শকের উপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করি, এটা ভালো মনে হয় আমার কাছে।
View this post on Instagram
আমি ঠিক এভাবে বলিনি। তাঁর জীবন খুবই কঠিন। এটা খুবই সোজাসাপ্টা কথা হবে যে, আমার জীবন তাঁর মতোই তাই আমি তাঁকে সিনেমার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছি। আমরা স্বাধীন ভারতে জন্মগ্রহণ করেছি। সেই দিনগুলোতে তিনি প্রকৃত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তিনি যেভাবে সংগ্রাম করেছিলেন, এবং তার মৃত্যু যেভাবে হয়েছিল এর ভেতরের ব্যাপারটি অনুভব করা খুবই কঠিন।আমাদের একটি সঠিক সংবিধান আছে, আমরা নিজেরা স্বাধীনভাবে সংগ্রাম করতে পারি। কিন্তু কাউকে যদি তার ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় কিংবা আপনার জায়গা থেকে তাড়িয়ে দেয়। কারণ তারা মনে করে আপনার জায়গা, সম্পদ তাদের নিয়ে নেওয়ার অধিকার আছে। সুতরাং এটা ছিল খুবই বাস্তবিক ও কঠিন ব্যাপার। কিন্তু আমি অবশ্যই তার ভেতরের জীবনীশক্তিকে আমি শ্রদ্ধা করি। এটা আমি নিজের মধ্যে করতে চেয়েছি।
View this post on Instagram
Leave A Comment