গত ২ মে ছিল কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন। পথের পাঁচালী থেকে আগন্তুক, সত্যজিৎ তৈরি করেছিলেন অসাধারণ সব সিনেমা। তাঁর একটি সিনেমা অশনি সংকেত-এ অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশী অভিনেত্রী ববিতা। সম্প্রতি তিনি সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করার স্মৃতিচারণ করলেন।
বাংলাদেশী ওয়েবপোর্টাল বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া ওই সাক্ষাতকারে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করার নানা অভিজ্ঞতার কথা উঠে আসে। উঠে আসে সত্যজিৎ রায় পরিবারের সঙ্গে ববিতার আন্তরিকতার দিকটিও।
ছবিটি বার্লিন চলচ্চিত্র উতসবে গোল্ডেন বিয়ার পুরস্কার পেয়েছিল। সেই ছবিতেই ববিতার অভিনয় করেছিলেন অনঙ্গ বউ চরিত্রে। খ্যাতি পেয়েছিলেন উপমহাদেশ জুড়ে।

অশনি সংকেত ছবিতে ববিতা। ছবি: সত্যজিৎ ডট অর্গ
ববিতা জানান, সত্যজিৎ রায় রোদের মধ্যে খুব বেশি কাজ করতে পছন্দ করতেন না। তাই চিত্রগ্রাহক সৌমেন্দু রায় থাকলেও বেশিরভাগ শট তিনিই নিতেন। তাঁর চিত্রনাট্যের বাম দিকে স্টোরি বোর্ড আঁকা থাকত। তা ধরে ধরে শট নিতেন; আর ডানে থাকত সংলাপ।
ছবির নির্মাণ শেষ হওয়ার পর ভারতে মুক্তির আগেই ১৯৭৩ সালে বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভালে ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছিল। মানিকদাসহ ছবির অভিনয়শিল্পীরা জার্মানের পথে রওনা হলাম। ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর গিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টের কারণে আমাকে আটকে দেওয়া হলো। কারণ তখনও জার্মানি বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। আমি যেতে পারব না শুনে কাঁদতে কাঁদতে একদম ফ্লোরে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল।
মানিকদা দেখে বললেন, ‘কাঁদিস না, দেখি কী করতে পারি’। ঘণ্টাখানেক ফেস্টিভাল কমিটির চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন সরকারি লোকজনের সঙ্গে কথা বলে সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করলেন। সেবার ফেস্টিভালে গিয়ে জানতে পারি আমাদের ছবি ‘গ্লোন্ডেন বিয়ার’ পুরস্কার জিতেছে।
সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে ববিতার শেষ দেখা হয় রায়ের মারা যাওয়ার আগে। তখন তিনি হাসপাতালে অসুস্থ ছিলেন। ববিতা তাঁকে শেষবার দেখেন, কিন্তু প্রিয় মানিক দার সঙ্গে আর কথা হয়নি। কারণ সত্যজিৎ রায়ের তখন কথা বলার অবস্থা ছিল না।
১৯২১ সালের ২ মে জন্মেছিলেন সত্যজিৎ রায়। তাঁর বাবা বিখ্যাত সাহিত্যিক সুকুমার রায়। পিতামহ ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী।
Leave A Comment