গল্প একটাই। তাঁকে নানা দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখানো যায়। এমন ছবির কথা বললে, প্রথমেই চলে আসে ধ্রুপদি জাপানি চলচ্চিত্র রশোমন–এর নাম। আকিরা কুরোসাওয়ার এই ছবি পশ্চিমে জাপানি চলচ্চিত্রকে আলাদা পরিচিত এনে দিল। তার পরবর্তী প্রজন্মের চলচ্চিত্রকার পেদ্রো আলমদোভারের লা মালা এদুকাসিওন, ইংরেজিতে যার নাম ব্যাড এডুকেশন, ছবিটিকে একই ঘরানার বললে খুব একটা খারাপ হবে না।
চলচ্চিত্রকার এনরিকে গোদা। তাঁর কাছে হাজির বাল্য বন্ধু এগনাসিও। এগনাসিও একটি পাণ্ডুলিপি লিখে এনেছে। সেটি সে চলচ্চিত্র করতে চায়। বন্ধু এনরিকে নিল এটি। এই পাণ্ডুলিপিতে লেখা দুই বন্ধুর বাল্য ইতিহাস। পরিচালক আলমদোভার ফ্ল্যাশব্যাকে দেখান দুই বন্ধুর বন্ধুত্ব। তাতে উঠে আসে যাজকদের যৌন নিগ্রহ।
মাদকসহ জীবনের নানা টানা পোড়েন। বন্ধুর পাণ্ডুলিপি দিয়ে শুরু হয় চলচ্চিত্র নির্মাণ। চলচ্চিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে এনরিকেরও মনে পড়ে সেই সব দিনগুলো। এনরিকে নস্টালজিক হয়ে যায়। এরই মাঝে এনিরকের ছবির শুটিং শেষ। হঠাৎ হাজির হন ছবির খলনায়ক। এসে জানান, পান্ডুলিপি যেভাবে লেখা হয়েছে তা ঠিক নয়। শুরু হয় তাঁর বয়ানে নতুন করে আবার গল্প। এভাবেই নানা জনের প্রেক্ষিতে নানা মাত্রায় বলা হয় একটি গল্পই।
অভিনয় নিয়ে উচ্ছ্বাস সবচেয়ে বেশি। এগনাসিওর চরিত্রে মেক্সিকোর অভিনেতা গাইল গার্সিয়ে বেরনাল। বেরনালের সঙ্গে আমার পরিচয় আলেহান্দ্রো গনসালেস ইনাররিতুর ডেথ ট্রিলোজির ছবি আমরোস প্যারোস দিয়ে। আর আলমদোভারের ব্যাড অ্যাডুকেশন ছবি জুড়েই ছিলেন বেরনাল। শুধু এইটুকু বলব, স্রেফ বেরনালের অভিনয় দেখার জন্য ছবিটি দেখে ফেলুন। আলমদোভার ছবিটির চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করেছিলেন ১০ বছর। বেরনালের সঙ্গে চরিত্র বোঝাপড়ায় কতদিন কাটিয়েছেন, কে যানে? আপনি যদি পেইন অ্যান্ড গ্লোরির আন্তোনিও ব্যান্দেরাসকে দশে দশ দেন। তবে বেরনালও দশের কম পাবেন না।পেদ্রো আলমদোভারের ‘আনপ্লানড ট্রিলোজি’র একটি ছবি লা মালা এদুকাসিওন বা ব্যাড অ্যাডুকেশন। অন্য দুটি হলো লা লে দেল দেসিও বা লজ অব ডিজেয়ার এবং ডোলো ই গ্লোরিয়া বা পেইন অ্যান্ড গ্লোরি। পেদ্রো আলমদোভারকে চিনতে ছবি তিনটি দেখার কোনো জুড়ি নেই।
Leave A Comment